সপ্তাহখানেক আগেই চট্টগ্রাম থেকে ঘুরে এলেন খোকন সাহেব। বেড়ানোর পাশাপাশি ব্যবসার কিছু কাজও ছিল। কিন্তু এতো দ্রুতই চট্টগ্রামে অর্ডার পেয়ে যাবেন সেটা আশা করেননি। মোবাইলটা বালিশের পাশে রেখে উঠে বসলেন তিনি। মাত্র বিকেল ৩টা বাজে। একটু আগেই খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ খেয়ে ঘুমিয়েছেন। ভেবেছিলেন এক ঘুমেই বিকেলটা পার হবে। 

জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখেন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আজ সকাল থেকেই এই অবস্থা। বৃষ্টির মধ্যে কোথায় যাবেন ট্রাক খুঁজতে চিন্তা করতে থাকেন। ঘুম কাটানোর জন্য বিছানা ছেড়ে উঠে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেন তিনি। কিন্তু দুপুরের এই ঘুমটা কাটানো বড়ই কঠিন। এমন সময় আবার মোবাইল বেজে উঠে। পরশু দিনের মধ্যে মাল পাঠাতে হবে চট্টগ্রাম পোর্টে।

এবার খোকন সাহেবের ঘুম কেটে যায়। ১৫০০ কার্টন মুড়ি ও চানাচুর পাঠাতে হবে। এতো বড় অর্ডার তিনি হাতছাড়া করতে চান না। বন্ধু মোজাম্মেলকে ফোন দেন তিনি। 

সে নাকি অনলাইনে ঘরে বসেই ট্রাক ভাড়া পায়! 

মোজাম্মেল তাকে জিম ডিজিটাল ট্রাকের কথা জানায়। খোকন সাহেব বিস্তারিত শুনে জিমের ফেসবুক পেজে ট্রাক ভাড়া সম্পর্কে জানতে চায়। তাকে জিমের প্রতিনিধি ফোন করে রেজিস্ট্রেশন করতে সাহায্য করে। খোকন সাহেব বিকেলের দিকে ১৩ টন ও ২২ ফুটের একটি কাভার্ড ট্রাক চেয়ে ট্রিপ তৈরি করেন। তার ট্রাক যাবে যাত্রাবাড়ী থেকে চট্টগ্রাম পোর্টে।

সন্ধ্যা ৭টার মধ্যেই তার ট্রিপে দু’টি বিড পরে। যার মধ্যে একটি বাজার মূল্যের চেয়ে অর্ধেক দাম!

তিনি বিডটি গ্রহণ করার পর জিম ব্যাপারটি অনুসন্ধান করে জানতে পারেন, কাভার্ড ট্রাকটি চট্টগ্রামের। আজ রাতেই এটি চট্টগ্রাম পোর্টে রিটার্ন যাবে। বেশিরভাগ সময় রিটার্ন ট্রাক খালি যায়। তাই তারা অর্ধেক দামেই বিড করে।

খোকন সাহেব তো মহা খুশি। অর্ধেক দামে ২২ ফুটের ট্রাক ভাড়া পেয়েছেন। তার ১৫০০ কার্টন পণ্য নিয়ে রাত ১০টার দিকে যাত্রাবাড়ী জাপানী বাজার থেকে কাভার্ড ট্রাকটি রওনা দেয়। ট্রাক পণ্য নিয়ে পরেরদিন সকাল ১১টার দিকে পোর্টে পৌঁছায়। তবে খোকন সাহেবের বিজনেস পার্টনার পণ্য আনলোড করতে দেরি করে। আনলোড হতে হতে দুপুর হয়।

খোকন সাহেব জিমের সাথে কথা বলে ট্রাক মালিককে বাড়তি আরও ১০০০ টাকা দেয়।

সব ঝামেলা শেষ হওয়ার পর বিকেলের দিকে খোকন সাহেব বাসা থেকে বের হবেন ঠিক করেন। এই সময়টায় তার গরম গরম চা আর পুরি খেতে ভালো লাগে। বাইরে আজও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। খোকন সাহেব ছাতা ছাড়াই বের হলেন। এখন আর কোনকিছু নিয়ে টেনশন হচ্ছে না। যেখানে ট্রাক ভাড়া করার মতো জটিল কাজ মোবাইলেই হয়ে যায়, সেখানে আবার চিন্তা কিসে!  

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।